h2>Dating : Short Story
More Story : click here
Blog : https://newsmartdigitalbangla.blogspot.com/
মা খুব অবাক হয়ে বাবাকে দেখতে থাকবেন। পাচ বছর পর কাওকে দেখলে তো অবাক হওয়ার ই কথা। বাবা খুব নর্মাল ভঙ্গিতে বলবেন এই শাহিলার মা এই সন্ধ্যার সময় কেও এভাবে শুয়ে থাকে? কয়দিন পর মেয়েরা শশুড়বাড়ি যাবে। তোমার মেয়েরাও যদি এভাবে জামাইয়ের বাড়িতে খালি শুয়ে থাকে আমার মান সম্মানটা কোথায় থাকবে বলো! আচ্ছা, এখন ওঠো। দেখো কি বাজার নিয়ে এসেছি। এমনভাবে বলবেন যেনো রাজ্য জয় করে নিয়ে এসেছেন। মনোয়ারা বেগম বিছানা থেকে উঠে অবাক চোখে অনেকক্ষণ ধরে তাকিয়ে থাকবেন। এরপর কোন কথা না বলেই রান্নাঘরে যাবেন সত্যি সত্যি বাজার আনা হয়েছে, নাকি তা দেখার জন্য। শাফায়াত হোসাইন ফিসফিস করে অপরাধীর মতন তার বড় মেয়েকে বলবেন, শাহিলা তোর মাকে গিয়ে বল শোল মাছটা যেন শাজনা দিয়ে রান্না করে।
শাহিলা হাসতে লাগলো।
শিউলি হঠাৎ বারান্দায় এসে দেখলো তার বড় বোন একমনে হাসছে।
— দিদি এই দিদি কি হয়েছে? হাসছো কেন?
শাহিলার ভ্রম ভাঙ্গে।
— আচ্ছা হাসো। এই নাও চা। চা খাও আর হাসো।
শিউলি অনেক সুন্দর চা বানায়। শাহিলার মনে হয় শিউলি সবকিছুই অনেক সুন্দর করে করতে পারে। কিন্তু ইচ্ছা করেই করে না। শিউলিটা দিনদিন সুন্দরী হচ্ছে। চমক লাগানো সুন্দর। জন্মের সময় তাদের দাদু শিউলিকে দেখে বলছিলেন শিউলির চেহারা হবে ফজলি আমের মতন। এখন সত্যি দাদুর কথা মিলে যাচ্ছে।
শাহিলা জিজ্ঞাসা করলো, শিউলি তোর কি বাবার কথা মনে পড়ে না?
শিউলি অন্যমনস্ক হয়ে জবাব দিলো, হুম।
শাহিলা এখন আর তার ছোট বোনটাকে ঠিক বুঝতে পারে না। এই তো এক দুই বছর বছর আগেও যেদিন খুব বৃষ্টি পড়তো, ঝমঝম করে। শিউলির কি কান্না। তার এক কথা, বাবা এখন কবরে একা একা শুয়ে ভিজছে না! একা একা কেও ভেজে! বাবা ভয় পাবে না।
এমনকি খাওয়া দাওয়া-ও সব বন্ধ করে ফেলতো। যতক্ষন পর্যন্ত না সে বাবার কবরের ওখানে যাবে ততক্ষন সে কিছুই খাবে না। শেষে তাকে বাবার কবরের ওখানে যেতেই হোতো। শিউলির একটা রঙবেরঙের ছাতা ছিলো। বাবাই কিনে দিছিলেন। সে ওই ছাতাটা বাবার কবরের মাথায় ধরে রাখতো আর চোখ মুছতে মুছতে বলতো বাবা খুব খুব সরি। আসতে কতো দেরী হয়ে গেলো ।তুমি কান্না করো নি তো?